Wednesday, March 1, 2017

স্বপ্নের মতো

অফিস থেকে ফিরে, ড্রয়িং রুমে অভ্যাসমতো কাঁধ থেকে ব্যাগটা রাখতেই মা বললেন, 'তোর একটা ক্যুরিয়ার এসেছে, ভেতরের ঘরে দেরাজের ওপর রাখা আছে'। মনে পড়তেই বুকের মধ্যে মৃদু কম্পন অনুভব করলুম। একটা পার্সেল আসার কথা ছিল বটে। জিজ্ঞেস করলাম, 'কখন এসেছে' ?
- ওই দুপুরের দিকে.......আড়াইটে তিনটে নাগাদ হবে। 
- ও........আচ্ছা।  

পায়ে পায়ে ভিতরের ঘরে গিয়ে ঢুকলুম। দেরাজের ওপর থেকে সাদা খামটা নিয়ে এক ঝটকায় মুখটা ছিঁড়ে ফেললুম। যেটা বেরিয়ে এলো সেটা আমার এতদিনকার নিরন্তর কলম পিষে চলার প্রথম স্বীকৃতি, আমার গোপন প্রেমের স্থির অক্ষরচিহ্ন। তবে বসন্ত বোধহয় সত্যিই এলো। আসবে যে, তার আগাম খবর পেয়েছিলুম, কিন্তু সে যে আমার তালুবন্দী হয়ে আমারই হৃদস্পন্দন দ্বিগুন বাড়িয়ে তুলবে এ আমার কল্পনাতীত ছিল। একটা মাঝারি সাইজের কবিতার বই যার রঙিন প্রচ্ছদের জলরঙে আমার মধ্যবয়সী বাউন্ডুলে আবেগ মিলেমিশে এক হয়ে যেতে লাগলো। কাঁপা কাঁপা হাতে সূচিপত্র খুঁজে বের করে ফেললুম আটচল্লিশ নম্বর পাতাটা। সে পাতার ওপর সারি সারি কালো কালির বিন্যাস যেন আমার বুকের ভেতর কালবৈশাখীর ঝড় হয়ে বইতে শুরু করে দিলে। আর আমি স্থানুর মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঠায় চেয়ে রইলুম আমার শব্দসন্তানের দিকে। 'ঘুম আসছে' - আমার প্রথম ছেপে আসা কবিতা। 

বাড়ি বসেই যে এমন ম্যাজিক দেখতে পাবো ভাবিনি কখনো। তাই সম্পাদক সুরজিৎ হালদারকে শুকনো ধন্যবাদ দেব না। আমার কবিতা ও লেখা পড়ে আপনি যে অঙ্কুরের কবিতা সংকলনে আমার কবিতাটি মনোনীত করেছেন তার জন্য চিরতরে ঋণী হয়ে রইলুম আপনার ও সংস্থার অন্যান্য সদস্যদের প্রতি। আপনাদের মঙ্গল হোক। আর কি বলি ? এই অনুভূতি প্রথম প্রেম নিবেদনেই বাজিমাত করার মতো কতকটা, ভাষায় বুঝিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। আমার 'মলাটের' পাঠক পাঠিকাদের অনুরোধ করি এভাবেই পাশে থাকুন..........আপনাদের উৎসাহতেই এটি সম্ভব হলো।  

পুনশ্চ : বইয়ের মূল্য চল্লিশ টাকা। এটি সংগ্রহ করার জন্য সম্পাদক সুরজিৎ হালদারের সাথে যোগাযোগ করুন সত্ত্বর।

ছবি : নিজস্ব 

ছবি : নিজস্ব 


#bengaliarticles #bengaliwriteups #respect #gratitude


No comments:

Post a Comment