Saturday, December 17, 2016

সাপ্তাহিকী ২১ # শখের জিনিস - প্রথম পর্ব

সকালের কাগজটা নিয়ে চোখ পিটপিট করে তাকালেন দেবাঞ্জন। সামান্য ঝাপসা লাগছে যেন। তবে কি পাওয়ার বাড়লো ? তা কি করে হয় ? এই তো কমাস আগেই দোকানে গিয়ে পাওয়ার চেক করালেন। ঠিকই তো ছিল। তবে ? তাহলে বোধহয় চোখে কিছু পড়েছে। চেয়ার ছেড়ে উঠে ভালো করে চোখে মুখে জল দিয়ে এলেন, কিন্তু না, ঝাপসা ভাবটা কিছুতেই যেন কাটছে না। ভারী বিপদ হলো। সত্যিই যদি পাওয়ার বেড়ে গিয়ে থাকে তাহলে তো সবকটা চশমার লেন্স চেঞ্জ করতে হবে। সে তো বিরাট ঝক্কির কাজ। নয় নয় করে কম চশমা নেই দেবাঞ্জনের। খান পনেরো বিশেক তো হবেই। দেবাঞ্জনের চশমার ফ্রেমের ভারী শখ। বিভিন্ন দোকান ঘুরে ঘুরে নিত্য নতুন চশমার ফ্রেম কিনতে ভারী পছন্দ করেন তিনি। পাড়ার দোকানগুলো তো বটেই বৌবাজারের প্রায় সবকটা দোকানই দেবাঞ্জনকে বিলক্ষণ চেনে। নতুন কোনো ডিজাইন এলেই একাধিক দোকান থেকে ফোন আসে দেবাঞ্জনের কাছে। চশমার খাঁটি সমঝদার হিসেবে পরিচিত মহলেও বেশ সুনাম আছে তাঁর। সুতরাং এহেন দেবাঞ্জনের যদি চোখের পাওয়ার বেড়ে গিয়ে থাকে তবে সমূহ সমস্যা তো বটেই । সাতপাঁচ ভেবে দেবাঞ্জন ঠিক করলেন অফিস ফেরত একবার ইন্ডিয়ান অপ্টিকালসটা ঘুরে আসবেন। লালবাজার আর বৌবাজারের সংযোগস্থলে বহু বছরের বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান। এখানেই দেবাঞ্জন চোখ দেখিয়ে থাকেন বরাবর। আজ একটু কায়দা করে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বেরোতে হবে...........

শীতকাল বলে সন্ধে হয়ে গেছে অনেক্ষণ। চোখ দেখানো হয়ে গেছে। হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন দেবাঞ্জন। পাওয়ার বাড়েনি, ডাক্তার বলেছেন বয়সকালে অমন হয় একটু আধটু। মাঝে মাঝে দৃষ্টি ঝাপসা লাগে। তেমন চিন্তার কিছু নেই। একটা আই ড্রপ লিখে দিয়েছেন শুধু। কয়েকদিন দিলেই ঠিক হয়ে যাবে। ফুরফুরে হিমেল হাওয়ায় শরীরটা বেশ ঝরঝরে লাগে দেবাঞ্জনের। হাঁটতে হাঁটতে সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনের দিকে এগোতে থাকেন তিনি। সহসা একটা সরু গলির মধ্যে দূরে একটা ভাঙাচোরা দোকানের দিকে চোখ পড়ে যায়। টিমটিম করে একটা হলদেটে বাল্ব জ্বলছে সামনেটায়। একজন বৃদ্ধ একমনে একটা লেন্স পরিষ্কার করছেন একটা টেবিল ল্যাম্পের আলোয়। দেবাঞ্জন ভেবে মনে করতে পারেন না এই দোকানটা আগে দেখেছিলেন কিনা। আশপাশের দুচারটে দোকান বন্ধ থাকাতে বেশি করে যেন নজর পড়ে এই দোকানটার দিকে। হতে পারে বাকি দোকানের ভিড়ে এই দোকানটা বেমানান বলে ততটা দৃশ্যমান ছিল না। কৌতূহলবশে পায়ে পায়ে এগিয়ে যান দেবাঞ্জন। দোকানের আশপাশটা বেশ সংকীর্ণ, অন্ধকার। বাল্বের আলোর ছটায় দোকানের সামনেটাই যা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। চারপাশের জীর্ণ দেওয়ালগুলোয় মান্ধাতা আমলের ছাপ স্পষ্ট। বোঝাই যায় এই গলিটায় খুব একটা জনসমাগম হয় না। দেবাঞ্জনের পায়ের শব্দে মুখ তুলে তাকান বৃদ্ধ। খনখনে গলায় ব্যস্তসমস্ত হয়ে বলেন, 'সেলাম বাবুজি, কুছ চাহিয়ে' ?। দেবাঞ্জন লক্ষ্য করেন বৃদ্ধের পরনে সুতোর কাজ করা পাঞ্জাবি পাজামা, মাথায় সাদা মুসলমানি টুপি। কাঁচাপাকা দাড়ির আড়ালে মুখে সরল মৃদু হাসির আভাস। দেবাঞ্জন বলে ওঠেন, ' না না, কিছু চাই না, আসলে এই গলিটায় তো ঢুকিনি কখনো, আপনার দোকানের আলো জ্বলছে দেখে এগিয়ে এলাম'।

'তো কেয়া হুয়া বাবুজি, আপ তসরিফ রাখিয়ে, আপকো আভি বড়িয়া ফ্রেম দিখাতে হেঁ,' বলেই বৃদ্ধ প্লাস্টিকের টুলটা এগিয়ে দেন দেবাঞ্জনের দিকে। দেবাঞ্জন চলে আসতে চান, কিন্তু অশীতিপরের প্রতি অসম্মান করা হবে ভেবে বসে যান খানিক। মনে মনে ভাবেন, 'ঠিক আছে, দু একটা ফ্রেম দেখেই উঠে পড়বেন নাহয়, তাছাড়া দোকান দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওঁর মনের মতো জিনিস এখানে পাওয়া সম্ভব নয়'। বৃদ্ধ কাঁচের আলমারি থেকে একের পর এক ফ্রেম বের করে রাখতে থাকেন টেবিলের ওপর। অধিকাংশ ডিজাইনই হয় পুরোনো আমলের নয় সাধারণ মানের। দেবাঞ্জনের মতো শৌখিন মানুষের উপযুক্ত নয় সেসব। দু একটা ফ্রেম নেড়েচেড়ে উঠে পড়েন তিনি। কোনোটাই পাতে দেবার মতো নয়। বলেন, 'আজ নাহয় থাক, আমি আরেকদিন আসব'। বৃদ্ধ হাঁ হাঁ করে ওঠেন, 'সে কি বাবুজি, ঔর একদিন কিঁউ, হাম আভি আপকো...........' কথাটা শেষ করতে দেন না দেবাঞ্জন, বিরক্ত হয়ে বলেন, 'না না থাক, আমি অন্যদিন আসবখন'। বৃদ্ধ সঙ্গে সঙ্গে বলেন, 'আচ্ছা আচ্ছা রুকিয়ে, মুঝে পাতা হ্যায় আপকো ক্যায়সা ফ্রেম পসন্দ আয়েগা, এক মিনিট'..........বলেই পিছন ফিরে আলমারির তলা থেকে বের করে আনেন একটা সোনালী রঙের কাজ করা চৌকো মতো বাহারি কাঠের বাক্স। কাঠের বাক্সটা দেখে কিঞ্চিত থমকান দেবাঞ্জন। বৃদ্ধ ধীরে ধীরে বাক্স খুলে মখমলি কাপড়ের মধ্যে থেকে বের করে আনেন একটা ঈষৎ নীলচে রঙের মোটা ফ্রেমের চশমা। সে চশমার কোনো অসামান্য কারুকাজ নেই বটে তবে তার জৌলুস ও চেকনাই যেন চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। সে দিকে তাকিয়ে হাঁ হয়ে যান দেবাঞ্জন। বহু ডিজাইনার চশমা পড়েছেন এ যাবৎ কিন্তু এমন জিনিস কখনই তাঁর নজরে আসেনি। হলদেটে বাল্বের আলোয় সে চশমার দ্যুতি যেন ঠিকরে বেরোতে থাকে।

'প্যহনিয়ে বাবুজি, একবার প্যহনকে কে তো দেখিয়ে', মিটিমিটি হাসতে থাকেন বৃদ্ধ। চশমাটা পড়ে নিয়ে আয়নায় চোখ রাখেন দেবাঞ্জন, বাহান্ন বছরের মুখটা যেন ঝকঝক করছে, বয়সের বলিরেখা ছাপিয়ে এক আশ্চর্য ঔজ্জ্বল্য ফুটে উঠেছে যেন। বেশ বুঝতে পারেন এ জিনিস দিশি নয়। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন, 'কোথায় পেলেন এইটা' ? বৃদ্ধ এক মোহময় হাসি ছড়িয়ে বলেন, 'বাহারকা চিজ হ্যায় বাবুজি, সিঙ্গাপুর সে আয়া হ্যায়, সোচেথে কোই আচ্ছা সমঝদার আয়েগা তো নিকালেঙ্গে ইসে। আপহিকো দিখরহেঁ পেহলিবার'। দেবাঞ্জন চশমাটা খুলে তেরছা চোখে বলেন, 'লেন্সের পাওয়ার বললে কত তাড়াতাড়ি বানিয়ে দিতে পারবেন' ? বৃদ্ধ সামান্য চোখ কুঁচকে বলেন, 'করিব একঘন্টে মে রেডি হো জায়গা সাহাব'।

- আর দাম কত নেবেন ? ঠিক করে বলবেন কিন্তু, নাহলে........
- ঢাইহাজার কা এক পয়সা কম নেহি হোগা বাবুজি.......আপ সে কেয়া ঝুট বোলনা, আপ পেহলইবার মেরে দুকান আয়েহেঁ.....

সামান্য একটু চিন্তা করেন দেবাঞ্জন, তারপর পকেট থেকে সদ্য পাওয়া প্রেসক্রিপশনের কাগজটা বের করে বলেন, 'ঠিক আছে, যত তাড়াতাড়ি পারেন বানিয়ে দিন, আমি ওয়েট করছি'............   

নতুন চশমা পাওয়ার আনন্দে প্রায় ছুটতে ছুটতে বাড়ি ঢোকেন দেবাঞ্জন। চৈতালী জিজ্ঞেস করেন, 'কি ব্যাপার এতো দেরি করলে আজ' ?
- আর বোলো না বৌবাজার গিয়েছিলাম চোখ দেখাতে, ফেরার পথে একটা ভালো ফ্রেম পেলাম বুঝলে, কিনে নিলাম। বানাতেই যা একটু সময় লাগলো। 
- ওফফ, আবার চশমা, তোমাকে যে কি এক অদ্ভুত শখে পেয়ে বসেছে ভগবান জানেন। 

চৈতালীর কটাক্ষে খুব একটা পাত্তা দিলেন না দেবাঞ্জন। দ্রুত হাত মুখ ধুয়ে ডিনার সেরে নিলেন। চশমাটা আরেকবার চোখে না পড়া অবধি শান্তি নেই। ঘরের টুকিটাকি কাজ সেরে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ালেন। কাঠের বাক্স খুলে বের করে আনেন চশমাটা। টিউব লাইটের আলোয় ফ্রেমটা চকচক করে ওঠে। দেবাঞ্জনের মুখাবয়ব জুড়ে চরম তৃপ্তির আভা ছড়িয়ে পড়ে। পুরোনো চশমাটা খুলে রেখে নতুন ফ্রেম গলিয়ে নেন দু কানের পাশে । প্রথমটায় সামান্য একটু ঝাপসা লাগে। আলতো হাতে ফ্রেমটা আরেকবার সেট করেন নাকের ওপর। এইবার পরিষ্কার লাগে চারিদিক। বেশ দেখাচ্ছে। তারিয়ে তারিয়ে দেখতে থাকেন নিজেকে আর মনে মনে নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দেন বিরল অর্জনের উল্লাসে।
  
কিন্তু এ কি !! এটা কি দেখছেন ! কপালের ওপর একটা কাটা দাগ আর সামান্য ফোলা লাগছে যেন।
কি আশ্চর্য ! এটা তো খেয়াল করেননি আগে। কখন চোট লাগলো আর কোথায়ই বা লাগলো ? দেবাঞ্জন চিন্তা করতে লাগলেন। কিন্তু কপালের চোটটা কিছুতেই মনে করে উঠতে পারলেন না। দোকানে কি আয়না দেখেছিলেন ? হ্যাঁ, কিন্তু তখন তো ছিল না। তাহলে কি মেট্রোতে কোনোভাবে ধাক্কা টাক্কা ..................নাহ, মনে পড়ছে না বিন্দুমাত্র। ছটফট করতে থাকেন দেবাঞ্জন। আনন্দের এমন সন্ধিক্ষণে সামান্য চোটের চিন্তায় বিব্রত হয়ে পড়েন বেশ। হাত বাড়িয়ে কাটা জায়গাটায় ছুঁয়ে দেখলেন একবার। অদ্ভুত ! কোনো ব্যাথা তো নেই ! চশমাটা ড্রেসিং টেবিলের ওপর খুলে রেখে আবার আয়নার দিকে তাকালেন। একি ! একি দেখছেন তিনি ? বার কতক ভালো করে মুখটা দেখলেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। কপালের কাটা দাগটা বেমালুম উধাও। আশ্চর্য ! এই তো ছিল ! তাহলে কি ভুল দেখছিলেন এতক্ষণ ? তাড়াতাড়ি চশমাটা গলিয়ে নিয়ে আবার আয়নায় চোখ রাখলেন।  এই তো ! এই তো দেখা যাচ্ছে কাটা দাগটা ! কি ব্যাপার হলো ? চশমা পড়ে দাগটা দেখা যাচ্ছে দিব্যি অথচ চশমা খুলতেই দাগটা উধাও ! চশমাটা খুলে নিয়ে উল্টে পাল্টে দেখলেন দেবাঞ্জন, সন্দেহ করার মতো কিছু পেলেন না খুঁজে। টেবিলের ওপর চশমাটা রেখে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলেন । এ কি হচ্ছে ? এমনটাতো হয়নি আগে, তবে কি বয়েসের ভারে চোখেও ভুল দেখতে শুরু করলেন এবার ? মনের মধ্যে অসংখ্য প্রশ্ন তোলপাড় করতে লাগলো। ধীরে ধীরে বাথরুমের দিকে এগোলেন কপাল কুঁচকে। চৈতালী রান্নাঘর থেকে জিজ্ঞেস করলেন, 'কি হলো ফ্রেমটা দেখালে না আমায়' ? ব্যাজার মুখ করে দেবাঞ্জন বললেন, 'আসছি, ব্রাশটা করে আসি'। 

এইবার এক অত্যাশ্চর্য ঘটনা ঘটলো। বাথরুম থেকে বেরোবার সময়, ক্ষনিকের বেখেয়ালে চৌকাঠে হোঁচট খেয়ে দড়াম করে সামনে পরে গেলেন দেবাঞ্জন। মাথাটা জোর ঠুকে গেলো বাঁদিকের বেসিনটাতে। 'কি হলো কি হলো' বলে চিৎকার করে ছুটে এলেন চৈতালী। দেবাঞ্জন কপাল ধরে মুখ কুঁচকে বসে রইলেন মেঝের ওপর। চরম যন্ত্রণার চিহ্ন ফুটে উঠেছে সারা শরীর জুড়ে। কোনোরকমে ধরাধরি করে দেবাঞ্জনকে ওঠালেন। বললেন, 'একটু দেখে বেরোবে তো, ইশশশশ..... দেখো তো কপালটা কেমন কেটে গেলো বিচ্ছিরিরকম, তুমি সোফায় গিয়ে বস, আমি আয়োডিন নিয়ে আসছি',। 

আয়োডিন লাগিয়ে ধীরে ধীরে সোফা থেকে উঠলেন দেবাঞ্জন। বিছানায় যাবার আগে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ালেন একবার। ভালো করে দেখতে লাগলেন কতটা কেটেছে। যা দেখলেন তাতে দুচোখ বিস্ফারিত হয়ে উঠলো। দুহাত আয়নার ওপর ভর দিয়ে ভালো করে নিরীক্ষণ করতে লাগলেন কপালটা। কিছুক্ষন আগে আয়নায় দেখা কপালের অবিকল একই জায়গায় চোটটা লেগেছে, ঠিক ততটাই কেটেছে এবং ততটাই ফুলে উঠেছে। বেশ কয়েক মুহূর্ত থ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন নিশ্চুপ। ভুল দেখছেন নাকি ? এ কি করে সম্ভব ! চিৎকার করে ডাকলেন চৈতালীকে। চৈতালী ছুটে এলেন হুড়মুড়িয়ে।

'কি ব্যাপার ? আবার কিছু হলো নাকি' ? ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করেন চৈতালী। দেবাঞ্জন কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করেন, 'আচ্ছা, মনে করে দেখো তো, বাড়ি ঢোকার পর আমার কপালে কি কোনো কাটা দাগ বা চোট দেখতে পেয়েছিলে' ?.......... 'চোট ? কই না তো.......... কেন' ? চৈতালী অবাক হন। 'না, মানে আমি নতুন চশমাটা পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম জানো, স্পষ্ট দেখতে পেলাম কপালের এই বাঁদিকটায় একটা কাটা দাগ আর কেমন ফুলেও উঠেছিল' , বলে আঙুল দিয়ে কপালের জায়গাটা নির্দিষ্ট করে দেখান দেবাঞ্জন। চৈতালী ভারী আশ্চর্য হয়ে দেবাঞ্জনের মুখের দিকে তাকান, তারপর বলেন, 'আমি কিন্তু কোনো চোট টোট দেখিনি বাপু, আমার মনে হয় তুমি ভুল দেখেছ'। 
'না না চৈতালী, ভুল আমি দেখিনি, বিশ্বাস করো, আমি কিন্তু স্পষ্ট দেখেছিলাম, কারণ আমি চশমাটা পড়েছিলাম,....... দ্যাখো দ্যাখো, ঠিক এই জায়গাটায়..............' তোতলাতে থাকেন দেবাঞ্জন। 
'হ্যাঁ বুঝেছি, তুমি আয়নায় দেখলে আর তারপরেই পড়ে গিয়ে এক্কেবারে কপালের ঠিক ঐখানটাতেই চোট পেলে তাই তো' ? ঘাড় বেঁকিয়ে কৌতুকভরে জিজ্ঞেস করেন চৈতালী। দেবাঞ্জন হতভম্ব হয়ে যান, স্ত্রীর পরিহাসের কি উত্তর দেবেন ভেবে পান না। বটেই তো, যে আগের ঘটনাটা দেখেনি তাকে নির্ভুল ভাবে বোঝানো অসম্ভব, তাছাড়া বয়সজনিত সমস্যাটাও ফেলে দেওয়ার মতো নয় একেবারে। কিছুক্ষণ নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকেন দেবাঞ্জন, তারপর অস্ফুটে বলতে থাকেন, 'আমি কিন্তু ঠিকই দেখেছিলাম....... জানিনা কি করে ................' 
চৈতালী অট্টহাস্য করে ওঠেন, বলেন, 'তোমার নতুন চশমায়, কয়েক ঘন্টা পর কি হবে সেসব দেখা যায় বুঝি ? হাঃহাঃহাঃহাঃ, ভবিষ্যৎ দেখতে পাওয়া যায় বলছো' ?....................

(ক্রমশ)

শিল্প বিন্যাস : নিজস্ব 

#bengalishortstories #bengalihorrorstories #suspense #drama #thrill #saptahiki

No comments:

Post a Comment