আমাকে অনেক সময় অনেকেই বলেছেন যে গল্প ছাপানোর ক্ষেত্রে কেন আমি উদ্যোগ নিচ্ছি না বা নিই না। এর সম্যক দু একটা কারণ আছে। মুস্কিলটা হল আমি চাকুরিজীবি এবং তদুপরি বাঙালি। প্রথম ক্ষেত্রে হাঁপ ছাড়ার পর যেটুকু সময় বাঁচে তা দিয়ে সংসার নামক একটি ধর্ম আমাকে মন প্রাণ দিয়ে মেনে চলতে হয় (কিছু লোকে মানতে চায়না যদিও)। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে অবকাশের আচ্ছন্নতায় হারিয়ে যাওয়া আমার রক্তে আছে। তাছাড়া পাণ্ডুলিপি আঁকড়ে ধরে প্রকাশকদের দরজায় দরজায় টিপসই দেব এমন একটি রোবব্বার আমার কপালে জোটেনি এ অবধি। যদিও গল্প ছেপে বেরোনোর শখ আমার সাড়ে সতেরো আনাই আছে, এ স্বীকার করতে আমার বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই।
আমার সমস্ত দ্বিধা দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে, এহেন মোক্ষম সময় এক সহৃদয় প্রকাশনা এগিয়ে এলেন এবং আমার মতো আরো নতুন কলমদের সুযোগ দেওয়ার মনস্থির করলেন। এবং সঙ্গে এও জানালেন যে এই বইয়ের প্রকাশ হবে যে সে জায়গায় নয়, হবে একেবারে এবছরের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায়। প্রথমটায় বিশ্বাস করতে মন চায়নি কারণ আমার সাথে কোনো প্রকাশক নিজের থেকেই যোগাযোগ করবেন এটা কতকটা অলীক স্বপ্নের মতো। তাই কুণ্ঠায় মাখামাখি হয়ে আমার দুটি গল্প এগিয়ে দিয়েছিলাম প্রকাশকের টেবিলে। ভেবেছিলাম সহস্র গল্পের ভিড়ে তাদের বোধহয় পথভ্রম হবে। কিন্তু আমার সমস্ত আশঙ্কা মিথ্যে করে 'ছায়াসঙ্গী' জায়গা করে নিল উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রাদের মাঝে, প্রতিলিপির আকাশে।
সূচিপত্রে নাম দেখে প্রথম হওয়া প্রেমের মতো বুক কেঁপে উঠেছিল। আত্মহারা হয়ে রাস্তার ধারেই মোবাইল ধরে দাঁড়িয়েছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। রঙিন মলাটের ফাঁকে আমার 'মলাটের' পাতা থেকে উঠে আসা গল্প, মধুর বিস্ময়ে থমকে আছে প্রকাশের অপেক্ষায়, পাঠকের অপেক্ষায়, বইমেলার অপেক্ষায়। উজ্জ্বল সাহিত্য মন্দিরের কর্মকর্তা এবং সম্পাদকদ্বয় মৌমিতা দত্ত ও শুভ্রজ্যোতি পাল - কে আমার অনেক ভালোবাসা ও সেলাম। শেষের পাতায় কিংবদন্তি সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের দু চার পংক্তি লেখা শিহরণ জাগানোর পক্ষে যথেষ্ট। সর্বোপরি আমার সমস্ত পাঠকদের আমার নতুন করে কিচ্ছু বলার নেই, পাশে থেকে এই পিঠ চাপড়ানোটা না পেলে হয়ত এটা কখনোই সম্ভব হতো না। আপনাদের সকলকে কুর্নিশ।
পুনশ্চ : এই বইটি পাওয়া যাবে বইমেলার ৬ নম্বর গেটে, ২৫৬ নং স্টলে। ভালো থাকবেন......
#Molat #KolkataInternationalBookFair #KolkataBookFair2019 #bengalishortstories #bengaliliterature